• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

কারবালার ময়দানে ইমাম হোসাইন (রা.) এর সঙ্গে শহিদ হয়েছিলেন যারা

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২৩  

মুসলিম ইতিহাসের সবচেয়ে মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা হলো কারবালার ময়দানে নবীদৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) এর শাহাদাতবরণ।

৬৮০ খ্রিস্টাব্দের ১০ অক্টোবর আরবি হিসেবে ৬১ হিজরির ১০ মহররম (আশুরার দিনে) ইরাকের কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে তিনি নির্মমভাবে শহিদ হন। সেদিন তার সঙ্গে আরো অনেকে শহিদ হয়েছিলেন। সূত্র: কারবালার ইতিহাস।

আলী (রা.) এর সন্তানদের মধ্যে ছিলেন আবু বকর, জাফর, মুহাম্মাদ, উসমান ও আব্বাস; হোসাইন (রা.) এর সন্তানদের মধ্যে আবু বকর, ওমর, উসমান, আলী আকবর ও আবদুল্লাহ; হাসান (রা.) এর সন্তানদের মধ্যে আবু বকর, ওমর, আবদুল্লাহ ও কাসেম; আকিলের সন্তানদের মধ্যে জাফর, আবদুর রহমান ও আবদুল্লাহ ইবন মুসলিম ইবন আকিল; আবদুল্লাহ ইবন জাফরের সন্তানদের মধ্যে আউন ও আবদুল্লাহ। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আশুরার দিন কারবালা প্রান্তরে ইমাম হোসাইন (রা.) এর পক্ষের প্রায় ৭১-৭৩ জন শাহাদাতবরণ করেন। সূত্র: কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনার কারণ ও ফলাফল।

আল্লাহ তাদের প্রত্যেককে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, প্রতিটি মুসলিমের উচিত রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দৌহিত্র সাইয়েদ হোসাইন ইবন আলী (রা.) এর কারবালার প্রান্তরে শহিদ হওয়ার ঘটনায় ব্যথিত হওয়া ও সমবেদনা প্রকাশ করা। তিনি ছিলেন মুসলিম জাতির নেতা।

রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সর্বশ্রেষ্ঠ কন্যা ফাতেমার পুত্র হোসাইন (রা.) একজন বিজ্ঞ সাহাবি ছিলেন। হাসান ও হোসাইনের মর্যাদা রাসূল (সা.) থেকে একাধিক সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হাসান ও হোসাইন (রা.) প্রত্যেকেই জান্নাতি যুবকদের সর্দার’। (তিরমিজি: ৩৭৬৮)

নবী পরিবারকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসা ঈমানের অন্যতম আলামত। এক হাদিসে হাসান ও হোসাইন (রা.) এর ব্যাপারে নবীজি (স.) বলেন, ‘এরা দুজন আমার পৌত্র (দৌহিত্র) এবং আমার কন্যার পুত্র। হে আল্লাহ! আমি এদের দুজনকে ভালোবাসি। সুতরাং তুমি তাদের ভালোবাসো এবং যে ব্যক্তি এদের ভালোবাসবে, তুমি তাদেরও ভালোবাসো।’ (তিরমিজি: ৩৭৬৯) সূত্র: কারবালার যুদ্ধের কারণ, কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা, কারবালার ইতিহাস 

হাসান ও হোসাইন (রা.)-কে আল্লাহ তাআলাও ভালোবাসতেন। তাই তাদের নাম রেখেছিলেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। এ ব্যাপারে আলী (রা.) এর একটি বর্ণনা পাওয়া যায়, যেখানে আলী (রা.) বলেন, ‘যখন হাসানের জন্ম হলো, তখন তার নাম রাখলাম হামজা। যখন হোসাইন ভূমিষ্ঠ হলো তখন তার নাম রাখলাম জাফর। এরপর রাসূলুল্লাহ (স.) আমাকে ডাকলেন এবং বললেন, ‘এই দুজনের নাম বদলে দেওয়ার জন্য আমাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।’ আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই এ বিষয়ে ভালো জানেন। অতঃপর তিনি তাদের নাম রাখলেন হাসান ও হোসাইন।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৩৭০)

ইমাম হোসাইন (রা.) এর শাহাদাত কেয়ামত পর্যন্ত মুমিন মুসলমানের হৃদয়ে ব্যথার সমীরণ ও সত্যের পথে সংগ্রামের অনুপ্রেরণা জোগাবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইমাম হোসাইন (রা.) এর আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন। 

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা