• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩০ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

নেশার সৃষ্টি করে এমন বস্তু খাওয়া বা পান করা যাবে কী?

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৩ আগস্ট ২০২৩  

যে জিনিসের বেশি পান করলে বা খেলে নেশার সৃষ্টি করে তার অল্প অংশও নেশার হুকুমে পড়বে। নেশার সৃষ্টি করে এমন প্রতিটি বস্তুই মদের অন্তর্ভূক্ত। তাই নেশা সৃষ্টিকারী প্রতিটি বস্তুই খাওয়া বা পান করা হারাম। যে ব্যক্তি নেশার সৃষ্টিকারী কোনো জিনিস পান করলো; সে যেন তার ৪০ দিনের নামাজের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। এ কারণে নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য থেকে বিরত থাকা জরুরি।

নেশা সৃষ্টিকারী প্রতিটি জিনিসই পান করা হারাম। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকনির্দেশনাই তা প্রমাণ করে। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা ওঠে এসেছে-

১. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নেশা উদ্রেককারী প্রতিটি বস্তু মদের অন্তর্ভুক্ত। আর নেশা সৃষ্টিকারী প্রতিটি বস্তু হারাম। যে ব্যক্তি একবার নেশা উদ্রেককারী জিনিস পান করলো সে তার চল্লিশ দিনের নামাজের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। সে যদি তওবা করে আল্লাহ তার তওবা কবুল করতে পারেন। সে যদি চতুর্থবার তা পান করে তবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামীদের ঘা থেকে নির্গত পুঁজ খাওয়াবেন। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! ’তীনাতুল খাবাল’ কি? তিনি বললেন, জাহান্নামীদের পুঁজ। যে ব্যক্তি কোনো বালককে যার হালাল-হারাম সম্পর্কিত জ্ঞান হয়নি, এটা পান করাবে আল্লাহ তাকে অবশ্যই জাহান্নামীদের পুঁজ-রক্ত পান করাবেন।’ (আবু দাউদ)

২. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘প্রত্যেক নেশার বস্তুই মাদক (খামার) আর প্রত্যেক নেশার জিনিসই হারাম।’ (মুসলিম)

৩. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যা বেশি সেবন করলে নেশার সৃষ্টি হয় তা কম সেবন করাও হারাম।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ)

যেসব জিনিস পান করা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। সেসব জিনিস গ্রহণ করে নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে নিষেধ করেছেন স্বয়ং আল্লাহ। সিগারেটের গায়ে লেখা থাকে ‘ধুমপান মৃত্যু ঘটায়’। সিগারেট যেহেতু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে থাকে তাই তা থেকে বিরত থাকা জরুরি। আর যে জিনিস মৃত্যুর ঘটায় তা পান করাও কোরআনের আয়াত দ্বারা নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَ لَا تُلۡقُوۡا بِاَیۡدِیۡکُمۡ اِلَی التَّهۡلُکَۃِ

‘তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো না।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৯৫)

এ ছাড়াও মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে অপবিত্র ও হারাম জিনিস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। হালাল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَ یُحِلُّ لَهُمُ الطَّیِّبٰتِ وَ یُحَرِّمُ عَلَیۡهِمُ الۡخَبٰٓئِثَ

‘তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল ও অপবিত্র বস্তু হারাম করা হয়েছে।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৫৭)

মনে রাখা জরুরি

সিগারেটসহ যাবতীয় নেশা যেমন কোনো মানুষের পুষ্টি জোগায় না তেমনি এতে মানুষের ক্ষুধাও কমে না। তাই এটি বলতে গেলে জাহান্নামীদের খাবারের মতো। জাহান্নামীদেরও এমন খাবারই খাওয়ানো হবে। যাতে পুষ্টিও হবে না আবার ক্ষুধাও নিবারণ হবে না। জাহান্নামীদের খাবার প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন-

لَّا یُسۡمِنُ وَ لَا یُغۡنِیۡ مِنۡ جُوۡعٍ

‘এটা তাদের পুষ্টিও যোগাবে না ক্ষুধাও নিবারণ করবে না।’ (গাশিয়াহ : আয়াত ৭)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নেশা থেকে হেফাজত করুন। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মেনা চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা