• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

বিয়ে করলেন ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার আব্বাস

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২৩  

বিয়ে করেছেন বাগেরহাটে ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার যুবক আব্বাস শেখ (২৫)।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে খুলনার ডাকবাংলা এলাকার সেলিম গাজীর মেয়ে প্রায় একই উচ্চতার সোনিয়া খাতুনের (২০) সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

দুই পরিবারের সম্মতিতে ধর্মীয় নিয়মকানুন মেনে এক লাখ টাকা কাবিনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
নববিবাহিত আব্বাস শেখ রামপাল উপজেলার শ্রিফলতলা গ্রামের আজমল শেখের ছেলে। তিনি রামপাল সরকারি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার নববিবাহিত স্ত্রী সোনিয়া খাতুন খুলনার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার উচ্চতা ৩৭ ইঞ্চি।

ছোটবেলা থেকেই আব্বাসের উচ্চতা অনেক কম। যার কারণে প্রতিনিয়ত বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী, সহপাঠী এমনকি আত্মীয় স্বজনদের কাছে উপহাসের পাত্র ছিলেন। মানুষের হাসি-ঠাট্টা ও প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। স্নাতক পাস করে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার ইচ্ছে রয়েছে তার। স্ত্রীকেও উচ্চশিক্ষিত করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন আব্বাস শেখ।

আব্বাস শেখ বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করত। বন্ধুরা বলত আমি কখনো বিয়ে করতে পারব না। আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না। আল্লাহর রহমতে বিয়ে করেছি। শান্তিতে সংসারও করব।

সোনিয়াকে কিভাবে পেলেন এমন প্রশ্নে আব্বাস বলেন, বছর দেড়েক আগে পরিবারের পক্ষ থেকে পছন্দ করে রেখেছিল।  চলতি বছরে (২০ অক্টোবর) আমার দুই বোন জামাইসহ আমি সোনিয়াকে দেখতে যাই এবং তাকে আমার পছন্দ হয়। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে আমি আমার স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসছি। পরিবারের পছন্দতে বিয়ে করেছি আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারি।  

আব্বাসের মা নাজমা বেগম বলেন, ছোটবেলায় এক হাতে বই আর এক হাতে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছি। অনেক কষ্টে মানুষের কথা শুনে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছে। আমার দুই মেয়ে এবং একমাত্র ছেলে আব্বাস। অনেক কষ্টের ধন আমার, ওর জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।  

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল আলম বলেন, শারীরিকভাবে কিছুটা খাট হলেও আব্বাস একটি সামাজিক ছেলে। বিভিন্ন সামাজিক আচার-আচরণে তাকে অংশগ্রহণ করতে দেখেছি। বিয়েতে আমাকে দাওয়াত করেছিল। তার গায়ে হলুদে উপস্থিত ছিলাম। নবদম্পতিকে আমি শুভেচ্ছা জানাই। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা না করে তাদের প্রতিটি কাজে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন। প্রতিবন্ধীরা এখন আর সমাজের বোঝা নয়, সঠিকভাবে লালনপালন করতে পারলে তারা দেশের সম্পদ হয়ে উঠবে।  

সবাইকে প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের পাশে থাকার অনুরোধ জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা