প্রয়াত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর অপ্রকাশিত সাক্ষাৎকার
ষাট গম্বুজ টাইমস
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০
একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের নেপথ্য কারিগর ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। তিনি ওই সময় ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। মৃত্যুর আগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায়ের স্মৃতিচারণ করে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। অপ্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারে সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায় সহজ ছিল না। অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। কেননা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাষার ব্যাপারটা খুবই স্পর্শকাতর।’
তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিকে যেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করা হয়, সেই চেষ্টা প্রথম শুরু করেন কানাডায় একদল প্রবাসী বাংলাদেশি। তারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি দল গঠন করেন। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা দেয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘ সদর দফতরে আবেদন করে দলটি। জাতিসংঘ ইস্যুটি ইউনেস্কোতে তোলার প্রতিশ্রুতি দেয়। কারণ ইউনেস্কো ভাষার দিক দেখাশোনা করে থাকে। ওই গ্রুপটির প্রেসিডেন্ট প্রয়াত রফিকুল ইসলাম প্যারিসে অবস্থিত ইউনেস্কো সদর দফতরে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেন। কিন্তু জাতিসংঘের মতোই ইউনেস্কোও একটি আন্তঃসরকার সংস্থা। তাই এই সংস্থা কোনো বেসরকারি গ্রুপ কিংবা ব্যক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারে না। তাই তারা ইউনেস্কোর কোনো সদস্য দেশের মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাঠাতে বলে।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘প্রয়াত রফিকুল ইসলাম আমার সঙ্গে এবং ইউনেস্কোতে কর্মরত এক বাংলাদেশি কর্মকর্তা তোজাম্মেল (টনি) হকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা উভয়েই তাকে উৎসাহিত করি এবং কিভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে সে বিষয়ে তাদের পরামর্শ দেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোরালো সিদ্ধান্ত নেন এবং তাদের প্রস্তাব অনুমোদন করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবটি বাংলাদেশ সরকারের অফিসিয়াল প্রস্তাব হিসেবে ইউনেস্কোতে জমা দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দেন। সাধারণ সম্মেলনের মাত্র দু’দিন আগে আমরা এই নির্দেশ পাই।’ কিভাবে প্রস্তাবটি ইউনেস্কোর অনুমোদন লাভ করল তা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবের ব্যাপারে ইউনেস্কো সদর দফতর আপত্তি উত্থাপন করে। দুই কারণে এই আপত্তি ছিল। প্রথমত, প্রস্তাবের প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে হয়নি। দ্বিতীয়ত, এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে তার পেছনে আর্থিক সংশ্লিষ্টতার প্রয়োজন হবে। সেই অর্থ কিভাবে আসবে এমন প্রশ্ন তুলে ইউনেস্কো সদর দফতর আপত্তি জানায়। ইউনেস্কো সদর দফতর খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলে। তারপর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে পেশ করার আগে লিঙ্গুইস্টিক প্লুরালিজম অ্যান্ড মাল্টিলিঙ্গুয়াল এডুকেশন বিষয়ক অ্যাডভাইজরি কমিটির মাধ্যমে ইউনেস্কো নির্বাহী বোর্ডে জমা দিতে বলা হয়। ইউনেস্কোর আর্থিক সংকটের কারণে এই প্রস্তাবের আর্থিক সংশ্লেষের বিষয়টি সবিস্তারে উল্লেখ করার কথাও বলা হয়।’
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘আমি ইউনেস্কোর সদর দফতরের অবস্থান গ্রহণ করিনি। টনি হককে সঙ্গে নিয়ে ইউনেস্কোর উপ-মহাপরিচালক কলিন পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করি। আমরা কলিন পাওয়ারকে বোঝাই যে, আমাদের খসড়া প্রস্তাবের উদ্দেশ্য হল- সব মাতৃভাষার সুরক্ষা ও সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা। সদর দফতরের প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে প্রক্রিয়া সম্পাদন করতেই অনেক ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বাজেটের ব্যাপারে আমরা বলেছি যে, সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিজেদের উদ্যোগেই জাতীয়ভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে। ফলে এ প্রস্তাব পাস হলে তার জন্য ইউনেস্কোর আলাদা কোনো বাজেটের প্রয়োজন নেই।’
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক কলিন পাওয়ার এই ইস্যুর গুরুত্বের ব্যাপারে পরিপূর্ণ অবহিত ছিলেন। কারণ, তিনি জানতেন বিশ্বে সাত হাজারের বেশি ভাষা রয়েছে। তার মধ্যে বহুল প্রচলিত ভাষার সংখ্যা হাতেগোনা। ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক দাফতরিক কাজের কারণে এসব ভাষা ক্রমেই বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট ভাষাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। কলিন পাওয়ার সদর দফতরের আপত্তি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের প্রস্তাবটি সাধারণ সম্মেলনের দ্বিতীয় কমিশনে পেশ করার নির্দেশ দেন।
মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ‘আমি কমিশনের চেয়ারম্যান স্লোভাকিয়ার নাগরিক জে বোলমারের সঙ্গে দেখা করি এবং খসড়া প্রস্তাবটি অনুমোদনের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানাই।’
তিনি বলেন, প্রস্তাব পাশের প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল ইউনেস্কোর ১৮৫ সদস্যের সমর্থন আদায় করা। সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করার সময় ছিল না। ফলে লবিং করার সব কাজ প্যারিসেই করতে হয়েছিল। ইউনেস্কো প্রতিনিধি দলে পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা অন্তর্ভুক্ত থাকেন বিধায় তারা অনেক স্বাধীনতা ভোগ করেন। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের প্রস্তাবে কো-স্পন্সর হয় ২৮টি দেশ। এসব দেশ হল- ভারত, পাকিস্তান, ইরান, শ্রীলংকা, সৌদি আরব, ইতালি, মিসর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আইভরি কোস্ট, রাশিয়া, ফিলিপাইন, ওমান, সুরিনাম, স্লোভাকিয়া, হন্ডুরাস, কমরস, গাম্বিয়া, চিলি, ডমিনিকান রিপাবলিক, পাপুয়া নিউ গিনি, প্যারাগুয়ে, বাহামা, বেনিন, বেলারুশ, ভানুতো, মাইক্রোনেশিয়া এবং লিথিওনিয়া। প্রথমে স্পন্সরে থাকলেও পরে পাকিস্তান তাদের স্পন্সরশিপ প্রত্যাহার করে। ইউরোপের বড় দেশগুলোর মধ্যে শুধু ইতালি কো-স্পন্সর হলেও যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগাল মৌখিকভাবে প্রস্তাব সমর্থন করেছিল। স্পন্সর দেশগুলোর কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছিল যাতে বৃহত্তর আঙ্গিকে প্রস্তাবটি তোলা হয়। এতে বেশি দেশের সমর্থন মিলবে। কারণ ভাষার বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় ছিল, একক কোনো দেশ যদি প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই কিংবা লিঙ্গুইস্টিক কমিটির মাধ্যমে ইউনেস্কো বোর্ডে পাঠাতে প্রস্তাব করত তবে এই প্রস্তাব পাস করানো কঠিন হয়ে পড়ত। এ কারণে তিনি (সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী) ১২ নভেম্বর প্রস্তাবটি দ্বিতীয় কমিশনে উত্থাপন করেন। প্রস্তাবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, ভাষা দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ইউনেস্কোর দায়িত্ব হচ্ছে ভাষার সংরক্ষণ করা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ভাষার জন্য মানুষ আত্মত্যাগ করেন। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটা বিরল ঘটনা। এরপর পর্দার আড়ালে অনেক কাজ হয়েছে। কো-স্পন্সররা জোরালো সমর্থন দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ইউনেস্কোর মহাপরিচালক কচিহিরো মাতাসুরা আনুষ্ঠানিকভাবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেন।
- স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে বরিশালের নদীতে
- শরীরের ওপর দিয়ে চলে গেল ট্রেন, ভাগ্যক্রমে বাঁচল কিশোরী
- ‘আম্মু, তোমাকে ভালোবাসি’, ডেঙ্গুতে মৃত মাকে ছোট্ট আইয়ানের চিঠি
- বিয়ে করছেন কঙ্গনা, পাত্র কে?
- মেঘনায় ট্রলারডুবির ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
- হার্ভার্ডের অধ্যাপক ও বিখ্যাত বিজ্ঞানীর ইসলাম গ্রহণ
- বিগ বস` বিজয়ী এলভিশ গ্রেপ্তার
- মুশতাক দম্পতি টিকটক করলে সমস্যা নেই
- শৈলকুপায় মাটি খুঁড়ে মিলল ১৫ পবিত্র কোরআন শরিফ
- মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দেয় ৭ মার্চের ভাষণ: প্রধানমন্ত্রী
- দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্যদের নিষেধাজ্ঞা গ্রহণযোগ্য নয়
- চলতি মাসেই কমছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম
- রমজানে ভোক্তাদের যেন হয়রানি না হয়: প্রধানমন্ত্রী
- ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস অফিস এখন অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির আখড়া
- ভোমরা স্থলবন্দরে দুর্নীতি, ডেপুটি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি
- আগুনে পুড়লো পরিবারের পাঁচ সদস্য, পড়ে রইলো ভিসা-পাসপোর্ট
- সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি আয়োজন না করার নির্দেশ
- আমাদের পুলিশ আরও স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
- কমিশনের আশায় অবাস্তব প্রকল্প নেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
- বঙ্গবন্ধু অ্যাপ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- অবৈধ মজুদকারীদের গণধোলাই দেয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইউরোপীয়কমিশনের প্রেসিডেন্টের অভিনন্দন
- শতাব্দীরচ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণীদেরও এগিয়েআসতে হবে:প্রধানমন্ত্রী
- ভাষা শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বাগেরহাটে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, পুলিশসহ আহত ২৫
- সন্তানের দিকে তাকিয়ে এক দম্পতির সংসার জোড়া লাগিয়ে দিলো হাইকোর্ট
- বাগেরহাটে অপহৃত কলেজ শিক্ষার্থী উদ্ধার, আটক ৬
- বাগেরহাটে তৈরি ৪০ হাজার ‘কাঠের সাইকেল’ যাচ্ছে ইউরোপে
- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জেলেনস্কির টুইট
- শৈলকুপায় মাটি খুঁড়ে মিলল ১৫ পবিত্র কোরআন শরিফ
- চলতি মাসেই কমছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম
- ভোমরা স্থলবন্দরে দুর্নীতি, ডেপুটি কমিশনারকে প্রত্যাহারের দাবি
- ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস অফিস এখন অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির আখড়া
- আগুনে পুড়লো পরিবারের পাঁচ সদস্য, পড়ে রইলো ভিসা-পাসপোর্ট
- হার্ভার্ডের অধ্যাপক ও বিখ্যাত বিজ্ঞানীর ইসলাম গ্রহণ
- সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি আয়োজন না করার নির্দেশ
- বিগ বস` বিজয়ী এলভিশ গ্রেপ্তার
- শরীরের ওপর দিয়ে চলে গেল ট্রেন, ভাগ্যক্রমে বাঁচল কিশোরী
- মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দেয় ৭ মার্চের ভাষণ: প্রধানমন্ত্রী
- আমাদের পুলিশ আরও স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
- মুশতাক দম্পতি টিকটক করলে সমস্যা নেই
- বিয়ে করছেন কঙ্গনা, পাত্র কে?
- রমজানে ভোক্তাদের যেন হয়রানি না হয়: প্রধানমন্ত্রী
- মেঘনায় ট্রলারডুবির ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
- দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্যদের নিষেধাজ্ঞা গ্রহণযোগ্য নয়
- ‘আম্মু, তোমাকে ভালোবাসি’, ডেঙ্গুতে মৃত মাকে ছোট্ট আইয়ানের চিঠি
- স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে বরিশালের নদীতে