• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

হলি আর্টিজান মামলায় সাক্ষ্য দিলেন শাহআলী থানার ওসি

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০১৯  

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলায় শাহআলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন মিয়া আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

বুধবার (২৭ মার্চ) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান তার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। হামলার সময় পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. সালাউদ্দিন মিয়া গুলশান থানার ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাকে নিয়ে মামলাটিতে এখন পর্যন্ত ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।

সাক্ষ্য দিতে গিয়ে ওসি সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে গোলাগুলির সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ঘটনাস্থলে যেয়ে এসআই ফারুকসহ অনেক পুলিশ সদস্যদের দেখতে পাই। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা গুলি ও বোমা নিক্ষেপ শুরু করে। ওই স্থানের আশপাশ পুলিশ ঘিরে রাখে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৭৯/২০ নম্বর বাড়ির পাশে গ্রেনেড ও গুলিবর্ষণ করতে থাকে সন্ত্রাসীরা। ওই সময় গুলশান থানার ওসিসহ ৩০/৩৫ জন গুরুতর আহত হন। এরপর আহতদের পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরকিছু সময় পর বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিনের মৃত্যুর খবর শুনতে পাই।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার সময় দেশি-বিদেশি অনেককে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। লাশগুলির সুরতহালের ব্যবস্থা করি। ৪ জুলাই গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। আমি ওই মামলার রেকর্ড করি।

জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ সাক্ষীকে জেরা করেন। জেরা শেষে ৪ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল।

সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আসামি মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, শফিকুল ইসলাম ওরফে খালেদ, হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী ও হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এর আগে গত ২১ মার্চ হামলার ঘটনায় নিহত তৎকালীন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিনের স্ত্রী রেনকিমসহ পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অন্য সাক্ষীরা হলেন শরিফুল, আ. সবুর খান, নুরজাহান ও দাউদ।

গত ৬ ফেব্রুযারি ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে নিহত এসি রবিউল ইসলামের ছোট ভাই শামসুজ্জামান ও খালাতো ভাই আনোয়ার হোসেন এবং রেস্তোরাঁর ক্রেতা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের স্ত্রী শারমিনা পারভীনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এর আগে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন।

ওই ঘটনায় করা মামলায় ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করার পর গত ৪ ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

এ মামলার আসামিরা হলেন— হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত
কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।

২০১৮ সালের ৮ আগস্ট আট আসামির বিরুদ্ধে আদালত চার্জশিট গ্রহণ করার পর ২৬ নভেম্বর এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।

এদিকে সম্প্রতি এ মামলার পলাতক আসামি মামুনুর রশিদ ওরফে রিপনকে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে গাজীপুরের বোর্ডবাজারের একটি বাস থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। আর শরিফুল ইসলাম ওরফে আব্দুস সবুর খান ওরফে হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে খালেদকে ২৫ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা