• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ষাট গম্বুজ বার্তা

নিউজিল্যান্ড সড়কে গর্ত আর গর্ত

ষাট গম্বুজ টাইমস

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

খাগড়াছড়ি পৌরসভার পানখাইয়াপাড়া থেকে কমলছড়ি মুখ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির নাম নিউজিল্যান্ড সড়ক। নাম গালভরা হলেও সড়কটির দশা বেহাল। পাকা এই সড়কের এখন কোথাও পিচঢালাইয়ের চিহ্ন নেই। সড়কের জায়গায় জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। একসময় অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, ট্রাক চলাচল করত এই রাস্তা দিয়ে। বর্তমানে রিকশা ছাড়া আর অন্য কোনো যানবাহন চলে না। কিছু অংশে সড়কবাতি থাকলেও ঠিকমতো জ্বলে না। তাই এই সড়ক এড়িয়ে চলাফেরা করতে হয় পৌর এলাকার বাসিন্দাদের। সড়কের আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা অনেক ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে বাজার ও পৌর সদরে যাতায়াত করে।

 স্থানীয় লোকজন জানান, পৌরসভায় এই সড়কটি পিচঢালাই করা হয় ২০০০ সালে। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি। প্রায় দুই দশকের পুরোনো সদর ইউনিয়নের কমলছড়ি, হেডম্যানপাড়া, ভুয়াছড়ি, গুচ্ছগ্রাম, মাইশছড়ি, ক্যংদগ, যাদুরামপাড়া ও দয়ামোহনপাড়াসহ ১১টি গ্রামের লোকজন সড়কটি ব্যবহার করে। তবে সড়কের দশা বেহাল হওয়ার কারণে তাদের অনেকে দীর্ঘ পথ ঘুরে গন্তব্যে যায়। কেউ কেউ দীর্ঘ পথ হেঁটে যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের চারদিকে গর্ত আর গর্ত। মাঝেমধ্যে ভাঙা কিছু অংশে সামান্য পিচঢালাই রয়ে গেছে। কিছু স্থানে ইট-সুরকি সরে গিয়ে কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে।

কথা হয় হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দা রুপায়ন চাকমার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সড়ক ভাঙা হওয়ায় বাধ্য হয়ে এক কিলোমিটারের জায়গায় চার কিলোমিটার ঘুরে মেয়েকে বিদ্যালয়ে দিয়ে আসি। এতে ভাড়াও লাগছে দ্বিগুণের মতো।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কটি যখন ভালো ছিল, তখন এই এলাকায় বিকেল হলে শহরের লোকজন বেড়াতে আসত। কয়েক বছর ধরে ভাঙা সড়কের কারণে লোকজন আর আসে না। দর্শনার্থীরা না আসায় নিউজিল্যান্ড এলাকার সড়কের পাশে দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বেকার হয়েছেন অনেকে। 

নিউজিল্যান্ড এলাকার কৃষক সুইলাপ্রু মারমা বলেন, সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় উৎপাদিত শাকসবজি ও কৃষিপণ্য বাজারে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রিকশায় নিয়ে গেলে ও ব্যয় বেড়ে যায়।

ওই এলাকার বাসিন্দা সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য অনিমেষ চাকমা রিংকু বলেন, সড়কটি ভালো থাকার সময় অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছিল। একসময় বিকেল হলে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা এসে পিঠা, চা ও নানা ধরনের নাশতা বিক্রি করে পরিবারে কিছু টাকার জোগান দিতে পারতেন।  

ওই এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মংরে মারমা বলেন, ‘১৫ বছর ধরে এই সড়কের ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সড়কটি সংস্কারের জন্য পৌরসভার মিটিংয়ে কয়েকবার উত্থাপন করেছি। মেরামত না হওয়ায় বর্তমানে সড়কটি চলার উপযোগী নেই।’

খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এলাকার লোকজন ভোগান্তিতে রয়েছে। পৌর এলাকার সড়কগুলো সংস্কারের জন্য পরিকল্পনামাফিক কিছু প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি। খুব শিগগির এ সড়কটি সংস্কার করা হবে।’

ষাট গম্বুজ বার্তা
ষাট গম্বুজ বার্তা